এম. এ. আলিম খান: শ্যামনগর আবাদ চন্ডিপুর দারুছ ছুন্নাত আলিম মাদ্রাসার ৯ম শ্রেণির ছাত্র মো: মফিজুর রহমান। ভালো ছাত্র জেডিসিতে এপ্লাস পেয়েছে। অসুস্থ দিনমজুর মা, বাবা স্ট্রোক করে আড়াই বছর আগেই মারাগেছে। বড় ভাই বিয়ে করে আলাদা থাকেন। দুই বোনের বিয়ে হয়েগেছে। বোনেরা মাঝে মধ্যে দুই একটি জামা, প্যান্ট ছোট ভাইকে কিনে দেন তাই পরেন। অভাবের তাড়নায় ঠিকমত খেতেও দিতে পারেন না ছেলেটিকে। দুঃখ করে বলছিলেন মফিজুরের মা হাজরা বেগম।
মাঝে মাঝে ছেলেটির লেখাপড়া বন্ধ হওয়ায় উপক্রম হয়। মফিজুরের মা আরও বলেন, পড়ালেখা বাদ দিয়ে ইটের ভাটায় পাঠাতে মন চায় কিন্তু মফিজুর ভালো ছাত্র। ক্লাস ওয়ান থেকে আজ পর্যন্ত রোল এক ছাড়া দুই হয়নি। তাছাড়া একটি ছেলে-মেয়েকেও ভালো করে লেখা-পড়া শেখাতে পারেনি। তাই ছোট ছেলেটিকে আমাদের কষ্ট হলেও লেখা পড়া শেখাতে চাই। মাত্র দুই কাঠা জমিতে একটি ঘর তুলে বসবাস করেন তারা। বাড়িতে একটি পানির কলও নেই। বৃষ্টির পানি এবং পাশের গ্রামের এক দীঘি থেকে পানি এনে পান করেন। হাজরা বেগমেরও দুইবার স্টোক হয়েছে। রোগে শোকে জর্জরিত। তারপরও ছেলেটির মুখের দিকে তাকিয়ে তাকে মানুষ করার জন্য অন্যের ঘেরে বাড়িতে দিনমজুরি করেন। মফিজুরের ইংরেজি, বাংলা ও আরবি হাতের লেখাও অনেক সুন্দর।
গত ২০১৭ সাল থেকে অস্ট্রেলিয়ার রোটারি ক্লাব অব হুইলার্স হিলের সৌজন্যে এরকম সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের রোটারি ক্লাবের বৃত্তি প্রদানে সহয়তা করছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ভলান্টিয়ার এসোসিয়েশন ফর বাংলাদেশ (ভাব-বাংলাদেশ)। তারই ধারাবাহিকতায় মফিজুরের বাড়ি সরেজমিনে পরিদর্শন করতে গিয়েছিলাম। আগামী জানুয়ারি মাস থেকে মফিজুরকে বিশেষ শিক্ষা বৃত্তি প্রদান করা হবে ইনশাআল্লাহ।
লেখক: স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ভাব-বাংলাদেশের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার ও কপোতাক্ষ নিউজের বিশেষ প্রতিনিধি।