প্রকাশিতঃ রবিবার, এপ্রিল ২৪, ২০২২ পঠিতঃ 46872
গত মঙ্গলবার নিউমার্কেটে ছাত্র ও ব্যবসায়ীদের মধ্যকার সংঘর্ষের সময় পুলিশের ওপর আক্রমণ, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় স্থানীয় বিএনপির নেতা মকবুল হোসেনকে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট।
অন্যদিকে সেদিনের সংঘর্ষে কারা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, কারা হেলমেট পরে চাপাতি, রামদা ইত্যাদি নিয়ে নাহিদ ও মুরসালিন নামের দুই নিরীহ তরুণকে খুন করেছে, সেই তথ্য ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসছে। এতে দেখা যায়, ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের বিবদমান চার গ্রুপের নেতা ও তাঁদের অনুসারীরা সরাসরি সংঘর্ষে লিপ্ত ছিলেন। তাহলে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা কি স্থানীয় বিএনপি নেতার হুকুমে এসব সন্ত্রাসী কাজ করেছেন?
বাংলাদেশে অনেক রাজনৈতিক সমঝোতার কথা আমরা জানি, ছাত্রলীগ থেকে ছাত্রদলে কিংবা ছাত্রদল থেকে ছাত্রলীগে যাওয়ার ঘটনাও কম নয়। কিন্তু ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বিএনপির কোনো নেতার হুকুমে মারপিট, ভাঙচুর করেছে, পুলিশের কাজে বাধা দিয়েছে, এমন উদাহরণ কেউ দেখাতে পারবেন না।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেদিন নিউমার্কেট এলাকার সংঘর্ষ থামাতে পারেনি, সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর আড়াই ঘণ্টা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে তারা। পুলিশ সময়মতো হস্তক্ষেপ করলে হয়তো নাহিদ ও মুরসালিনকে এভাবে জীবন দিতে হতো না। নাহিদ একটি কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মী আর মুরসালিন একটি দোকানের কর্মচারী ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, সেদিন দোকান কর্মচারী ও ছাত্রলীগের কর্মীরা উভয়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছেন। হতে পারে এ কারণে পুলিশ কোন পক্ষে যাবে ঠিক করতে পারছিল না। কেননা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান এখন জাতীয় স্লোগান।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিএনপির নেতাকে রিমান্ডে নিয়ে কী সত্য বের করতে চায়?
বিএনপি বা অন্য যেকোনো দলের নেতা-কর্মী সংঘর্ষ করলে, সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস করলে, পুলিশের কাজে বাধা দিলে অবশ্যই পুলিশ তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু সেদিনের ঘটনাটি ঘটেছে দিনের বেলায় শত শত লোকের সামনে। টিভিতে ছবি দেখানো হয়েছে। পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। গত শুক্রবার ডেইলি স্টারের ছবিতে দেখা যায়, একজন হেলমেটধারী তরুণ লম্বা ছড়ি দিয়ে নাহিদকে কোপাচ্ছেন। তাঁর পেছনে আরও ছয় হেলমেটধারী তরুণ দাঁড়িয়ে আছেন।
রোববার প্রথম আলোর খবরে বলা হয়, ‘নিউমার্কেট এলাকায় গত মঙ্গলবার সংঘর্ষের সময় কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মী নাহিদ হোসেনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় সরাসরি জড়িত দুজনকে শনাক্ত করতে পেরেছে পুলিশ। দুজনই ঢাকা কলেজের ছাত্র। থাকেন কলেজের উত্তর ছাত্রাবাসে। একজনের নাম কাইয়ুম, অন্যজনের নাম বলতে চায়নি পুলিশ। দুজনেই ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির একজন নেতার অনুসারী।
ইসরাফিল হোসেন / ইসরাফিল হোসেন