প্রকাশিতঃ বৃহস্পতিবার, মে ১২, ২০২২ পঠিতঃ 15687
টাঙ্গাইলে দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চলের বোরো ধান তলিয়ে গেছে। এতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষকরা। পাশাপাশি ধান কাটার শ্রমিক না পাওয়ায় তলিয়ে যাওয়া ধান ক্ষেতেই পচে নষ্ট হচ্ছে।
তবে কৃষি বিভাগের দাবি, আগে থেকে ধান কাটা শুরু হওয়ায় জেলায় ঘূর্ণিঝড় অশনির তেমন প্রভাব পড়েনি। ফলে নষ্ট হয়নি কৃষকের বোরো ধান।
জেলার ভূঞাপুর উপজেলার কয়েড়া গ্রামের কৃষক বাদশা মিয়া (৫৫)। ক্ষেতে তলিয়ে যাওয়া ধান কাঁচি দিয়ে টেনে টেনে তুলে কাটছেন আর আক্ষেপ করছেন। তিনি বলেন, ঈদের আগেই যদি ধানগুলো কাটা হতো, তাহলে হয়ত ক্ষতির মুখে পড়তে হতো না।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, টাঙ্গাইলের ১২ উপজেলায় এ বছর ১ লাখ ৭১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। আর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৩০ হাজার ৭৬৬ মেট্রিক টন। ২৮, ২৯ জাতের বোরো ধান কর্তন প্রায় শেষে দিকে। এ ছাড়া বিভিন্ন জাতের বোরো ধান ৬০ ভাগ পেকে গেছে। জেলায় ১৫০টি হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কাটা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৩০ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে।
জানা গেছে, জেলায় এ বছর বোরো ধানের আবাদ ভালো হলেও ঘুর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে ঝোড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চলের উপজেলাগুলোতে ধানের ক্ষতি হয়েছে। টানা বৃষ্টি হওয়ায় ক্ষেতে পানি জমে ধান তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া ধান কাটতে শ্রমিক প্রতি গুনতে হচ্ছে ৯০০-১০০০ টাকা। আর বাজারে ধানের দাম ৭০০-৮০০ টাকা মণ। ফলে এক মণ ধানের বিনিময়ে শ্রমিক পাচ্ছে না কৃষকরা।
কয়েড়া গ্রামের কৃষক বাদশা মিয়া বলেন, গেল রোজার শেষের দিকে জমির ধান পেকেছিল। ধান কাটবো কাটবো করে আর কাটা হয়নি। এর মধ্যে টানা বৃষ্টি শুরু হয়ে ক্ষেতে হাঁটু পানি জমে ধান তলিয়ে গেছে। দ্রুত যে ধান কাটব সে উপায় নেই।
ভূঞাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ড. হুমায়ুন কবীর বলেন, উপজেলায় ইতোমধ্যে ৪৫ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে। বাকি ধান কাটার অপেক্ষায় ছিল। তবে দুই দিনের বৃষ্টি আর অশনির প্রভাবে কিছু ধান শুয়ে পড়েছে। কিন্তু ধানের কোনো ক্ষতি হয়নি। তারপরও ধান কাটা অব্যাহত রয়েছে। আবহাওয়া ভালো হওয়ার পাশাপাশি কৃষকরা বৃষ্টি উপেক্ষা করে যদি ধান কাটতে পারে, তাহলে আগামী ১০-১২ দিনের মধ্যে ধান কাটা শেষ হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. আহসানুল বাশার বলেন, অশনিতে ফসলের কোনো ক্ষতি হয়নি। জেলার ভূঞাপুর, নাগরপুর, টাঙ্গাইল সদর, দেলদুয়ার ও বাসাইল উপজেলার নিম্নাঞ্চলের ৫০ ভাগ জমির ধানে দুই দিনের বৃষ্টির পানি প্রবেশ করেছে। এতে জমির ধান শুয়ে পড়লেও কোনো ক্ষতি হয়নি।
ইসরাফিল হোসেন / ইসরাফিল হোসেন